Ticker

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

মেডিটেশন এর উপকারিতা

 


মানুষের সমস্যার শেষ নেই। পৃথিবী জুড়ে এখন অস্তিরতা বিরাজ করছে। একে মানুষ নিজেদের সমস্যায় জর্জরিত তার উপর এসেছে করোনা ভাইরাস। মানুষ এখন দিশেহারা। ভবিষ্যতে কি ভয়াবহ পরিস্তিতি সৃষ্টি হবে তা কেউ জানেনা। দিন যতই অতিবাহিত হচ্ছে ততই খারাপ হচ্ছে চারপাশের  অবস্থা। ঘরে -বাইরে এখন শুধু টেনশন আর টেনশন। 

অতএব এ সমস্যা থেকে বাঁচতে হলে কার্যকরী কোনো উপায় খুঁজতে হবে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে একমাত্র মেডিটেশনের মাধ্যমে এ সমস্যা থেকে মুক্তি সম্ভব। মেডিটেশন এমন এক পদ্ধতি যার ফলে শরীর ও মন দুটোই ভাল থাকে। মেডিটেশন করার পদ্ধতি অথবা মেডিটেশন করার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। 

আরো পড়ুন -টেনশন থেকে মুক্তির উপায়

মেডিটেশন কি :

মেডিটেশন কি বা মেডিটেশন অর্থ কি এটা জানা অত্যন্ত জরুরি। মেডিটেশন বা ধ্যান হল একধরনের যার দ্বারা কোন ব্যক্তি তার মনকে একটি চেতনা বিশেষ অবস্থায় আনার চেষ্টা করে। এটি এমন একটি অভ্যাস যা হাজার হাজার বছর ধরে চলে আসছে এবং এটি মানসিক, মানসিক এবং শারীরিক সুস্থতার জন্য অসংখ্য উপকারের জন্য পরিচিত।অনেকে এটিকে প্রার্থনা বলে থাকে। তবে এটি কোনো প্রার্থনা নয়। এর মাধ্যমে আত্মার প্রশান্তি পাওয়া যায়। এর মূল উদ্দেশ্য হল মানুষকে মানসিক চাপ মুক্ত করা,শান্তি প্রদান করা। 

মেডিটেশন এর উপকারিতা :

মেডিটেশন  করার উপকারিতা অনেক । কিছু আলোচনা করা হল :

মানসিক চাপ মুক্ত করে। সারাদিনের কাজের ক্লান্তি,মানসিক দুশ্চিন্তা এসব অনেকখানি কমিয়ে ফেলে মেডিটেশন। 

আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিতে মেডিটেশনের জুড়ি নেই।  অনেকে নার্ভাসনেসে ভুগে থাকেন। মানুষের সাথে মিশতে পারেন না ,কথা বলতে ভয় পান। জব ইন্টারভিউতে আটকে যান। তারা যদি নিয়মিত মেডিটেশন করেন তবে খুব তাড়াতাড়ি সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। 

মেডিটেশন সম্ভবত মানসিক চাপ কমানোর ক্ষমতার জন্য সবচেয়ে সুপরিচিত। এটি মনকে শান্ত করতে সাহায্য করে এবং শিথিলতাকে উৎসাহিত করে, যা কর্টিসলের মতো স্ট্রেস হরমোনের উৎপাদন কমাতে পারে।

স্মৃতি শক্তি বাড়িয়ে তোলে। মেডিটেশন করার মাধ্যমে মস্তিষ্কের তথ্য ধারণ ক্ষমতা অনেক বেড়ে যায়। 

 নিয়মিত ধ্যান অনুশীলন আপনার মনোযোগ এবং মনোনিবেশ করার ক্ষমতা বাড়াতে পারে। এটি আপনার মনকে উপস্থিত থাকতে এবং বিক্ষিপ্ততা প্রতিরোধ করার জন্য প্রশিক্ষণ দেয়, যা আরও ভাল উত্পাদনশীলতার দিকে পরিচালিত করে। এর ফলে মন স্থির হয়। 

নিয়মিত মেডিটেশনের  ফলে ধৈর্য বৃদ্ধি পায়। ফলে মানুষ অনেক  সংযমী হয়। 

মন শান্ত করে এবং মানসিক বিশৃঙ্খলা হ্রাস করে, ধ্যান সৃজনশীলতা এবং সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা বাড়াতে পারে।

সঠিক নিয়মে মেডিটেশন করলে অনিদ্রা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।  ধ্যানের সাথে আসা রেসিং চিন্তার শিথিলতা এবং হ্রাস আপনাকে দ্রুত ঘুমিয়ে পড়তে এবং আরও গভীর, আরও বিশ্রামের ঘুম উপভোগ করতে সহায়তা করতে পারে। আপনি যদি আধা ঘন্টা মেডিটেশন করেন তবে তা শরীরকে দেড় ঘন্টা ঘুমের বিশ্রাম দিতে পারে। 

মেডিটেশন মননশীলতা তৈরি করে, যা  আপনাকে আপনার চিন্তাভাবনা এবং অনুভূতি সম্পর্কে আরও সচেতন হতে সাহায্য করতে পারে, যা আরও ভাল আত্ম-বোঝা এবং বিভিন্ন পরিস্থিতিতে আপনার প্রতিক্রিয়া পরিচালনা করার ক্ষমতার দিকে পরিচালিত করে।

রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণের মতো কঠিন বিষয়টি মেডিটেশনের মাধ্যমে করা সম্ভব। ধ্যানের রক্তচাপের উপর ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে বলে প্রমাণিত হয়েছে, যা ভাল কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যে অবদান রাখতে পারে।

মেডিটেশন মানুষকে উদার হতে শেখায়। এর ফলে মানুষ সব ব্যথা,রাগ ইত্যাদি দমন করতে পারে ও মানুষকে ক্ষমা করতে শিখে। 

মেডিটেশন করার নিয়ম :

 মেডিটেশন কিভাবে করতে হয় অবশ্যই জানা জরুরি। প্রথমত কোনো নিরিবিলি জায়গা বেছে নিতে হবে। ওই জায়গায় অবশ্যই যেন পর্যাপ্ত  আলো -বাতাস থাকে সেদিক খেয়াল রাখা জরুরি। ঢিলা -ঢালা কাপড় পড়া উচিত। ভোরবেলা মেডিটেশন করলে সবথেকে ভাল হয়। 

এবার আসনের উপর সোজা হয়ে বসে চোখ বন্ধ করতে হবে। 

কোনো মেডিটেশন মিউজিক  চালু করে রেখে দিলে নিজের জন্য সুবিধা হয়। 

কারণ শুরুতে হয়ত নিজের মন আয়ত্তে নাও থাকতে পারে। 

এরপর এক মনে কোনো একটি কেন্দ্রবিন্দু স্মরণ করে মনোসংযোগ করার চেষ্টা করতে হবে। 

সকল চিন্তা-ভাবনা ভুলে গিয়ে মস্তিস্ককে বিশ্রাম দিন। 

এভাবেই স্থির বসে থাকতে হবে। কমপক্ষে আধা ঘন্টা। 

এটি লক্ষ করা গুরুত্বপূর্ণ যে ধ্যানের অনেক সম্ভাব্য সুবিধা থাকলেও, এটি দ্রুত সমাধান নাও হতে পারে এবং ফলাফল ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে পরিবর্তিত হতে পারে। উপরন্তু, ধ্যানের বিভিন্ন রূপ রয়েছে, তাই আপনার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত কোনটি তা খুঁজে বের করতে হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ