পাইলস একটি সুপরিচিত রোগ। বর্তমানে রাস্তায় বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেখা যায়। রোগ থেকে চিরন্তন মুক্তি, একটি ফাইলই যথেষ্ট। এই লোভনীয় বিজ্ঞাপনগুলি দ্বারা অনেকে প্রতারিত হয়। তবে সব চিকিৎসকরা খারাপ হয় না, মানুষ কখনও কখনও উপকৃত হয় । তবে কোনও ভুয়া ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত নয়। পাইলস কী এবং কেন হয় তা জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আগে থেকে সচেতন হলে এই রোগ সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
পাইলস কি?
পাইলস মলদ্বারের একটি রোগ। মলত্যাগকালে মলদ্বারে চুলকানি, ব্যথাহীন রক্তক্ষরণ, মলদ্বারে ব্যথা ,পায়ুপথের বাইরের দিকে ফুলে যাওয়া বা বেরিয়ে আসা অনুভুতি এসব হ'ল পাইলস এর লক্ষণ ।
পাইলস কি কারনে হয়
যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রয়েছে তাদের এই রোগটি হতে পারে। এছাড়াও, মল ত্যাগকালে অত্যাধিক চাপ প্রয়োগ, অতিরিক্ত পরিমাণে ভার বহন করা,জন্মগত সমস্যা, ইত্যাদি কারণেও পাইলস হতে পারে।
শাকসবজি এবং অন্যান্য আঁশযুক্ত খাবার কম খাওয়া, গর্ভাবস্থা,পানি কম খাওয়া এই সমস্ত কারণ পাইলসের জন্য দায়ী।
অনেকে নিয়মিত ব্যায়াম না করার কারণে,অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাদ্য খাওয়ার ফলে ওজন বেড়ে যায়। এতে পাইলস রোগের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
আরো পড়ুন -দাঁতের যত্ন
পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা
যদিও পাইলস কোনও গুরুতর রোগ নয় তবে এটি দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা। সুতরাং এ বিষয়ে অবশ্যই সচেতন হতে হবে। পাইলস সারানোর উপায় সপর্কে নিচে আলোচনা করা হল।
পর্যাপ্ত পরিমাণে শাকসবজি এবং অন্যান্য আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ।
নিয়মিত ঘুমাতে হবে। কমপক্ষে 7-8 ঘন্টা।
প্রচুর পানি পান করতে হবে।
পাইলস হলে কি কি খাওয়া নিষেধ , এর উত্তরে -গরুর মাংস ,ছাগলের মাংস , কলে ছাটা ময়দা- আটা, চা, কফি, চকোলেট,তেলে ভাজা খাবার কম খাওয়া উচিত।
কোনও অতিরিক্ত কাজ করা যাবে না।
ফরমালিনমুক্ত ফলমূল, ডাল, মাছ, খেজুর,পেঁপে,আপেল,কমলা ইত্যাদি বেশি বেশি খেতে হবে।
পাইলস রোগের চিকিৎসা য় রোগীরা ভুল চিকিৎসার খপ্পরে পরে প্রায়শই অনেক কষ্ট পান। অনেক হাতুড়ে ডাক্তার আন্দাজে চিকিৎসা করে রোগীর অবস্থা আরো খারাপ করে ফেলেন। মলদ্বারে বিষাক্ত রাসায়নিক ইনজেকশন মারা হয়, এর ফলে মলদ্বারে পচন ধরে যায় এবং ঘা হয়।
এভাবে পাইলস থেকে ক্যান্সার হতে পারে। আস্তে আস্তে মলদ্বার বন্ধ হয়ে যায় । তখন মলদ্বারের বিকল্প পথ করে ব্যাগ লাগাতে হয় । এতে রোগীর কষ্টের সীমা থাকেনা ।
পাইলস এর হোমিও চিকিৎসা:
অনেক চিকিৎসক নিজেদের অর্শ-ভগন্দেরের চিকিৎসক বলে ঘোষণা করে । ঐসব ডাক্তাররা রোগীদের ইনজেকশনের মাধ্যমে চিকিৎসা দেয় আবার পাইলস এর মলম বা ক্রিম লাগাতে রোগীদের বলে। কিন্তু সেটা স্থায়ী সমাধান নয়।
পরবর্তীতে রোগ আরো জঠিল আকার ধারণ করে। এরকম অনেক চিকিৎসক আছেন চট্টগ্রাম ফেনীসহ অনেক জায়গায় যারা অপচিকিৎসা দিয়ে থাকে।
পাইলস এর জন্য হোমিও চিকিৎসা য় রোগের শুরুতে অভিজ্ঞ চিকিৎসকরা যেসব ওষুধ রোগীদের দেন তা হল- এলুমিনা, এলো, আর্সেনিক এল, এন্টিম ক্রোড, এমন কার্ব, নার্কস ভোম, সালফার, ইস্কিউর্লাস হিপ, কলিন সোনিয়া, এসিডি নাইট্রেকাম ইত্যাদি।
এগুলি হচ্ছে পাইলস এর ঔষধের নাম। তবে এসব ওষুধ হোমিও চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া সেবন করা যাবে না।
পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায়
টয়লেটে বসার ধরণ বদল করতে হবে। আপনি যখন কমোডে বসবেন তখন পায়ের নিচে রাখবেন ছোট একটি টুল। আর সামনের দিকে একটু ঝুকে বসতে হবে। এ পদ্ধতি অবলম্বন করলে পাইলস এর সমস্যা থেকে দূরে থাকা যায়।
আজকাল, আধুনিক চিকিৎসার কল্যাণে কোন কাটা ছেড়া ব্যতীত রিংলাইগেশন ও লংগো অপারেশনের মাধ্যমে ৯৫%রোগীর এ রোগ নিরাময় সম্ভব। তাই সময় থাকতে সতর্ক হওয়া দরকার।
0 মন্তব্যসমূহ