চোখের যত্ন কিভাবে নিবেন |
আমাদের এই অপরূপ সুন্দর পৃথিবীটা আমরা উপভোগ করি যে ইন্দ্রিয় দিয়ে তার নাম চোখ। মহান আল্লাহ'র অপরিসীম রহমত এই চোখদুটি। যদি চোখ না থাকত তবে এই সুন্দর পৃথিবী দেখা সম্ভব হতোনা।
তাই চোখ যে কত বড় অমূল্য সম্পদ সেটা আর বলার দরকার নেই। আর এই সম্পদটির পরিচর্যা /যত্ন করা অবশ্যই কর্তব্য। মানবদেহের পাঁচটি ইন্দ্রিয়ের মধ্যে সবচেয়ে দামি হল চোখ। অন্ধ লোক বোঝে চোখের মূল্য ।
চোখের যত্ন কিভাবে নিতে হয় তা আমরা অনেকেই জানিনা। সুস্থ থাকতে চোখের যত্ন নিতে হবে। কারণ অন্যান্য ইন্দ্রিয় সমূহ যেমন কান,নাক ,দাঁত ইত্যাদি ক্ষতিগ্রস্ত হলে মোটামুটি তেমন সমস্যা হয়না ,চোখ যদি নষ্ট হয় তবে পৃথিবীতে বাঁচতে ইচ্ছে করবে না । অতএব কেন চোখের যত্ন নেয়া উচিত তা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন।
আজকাল চলছে ইন্টারনেটের যুগ ,আধুনিক যুগ। এই যুগে সবাই কম্পিউটার কিংবা মোবাইল নিয়েই বিজি থাকে। এখন করোনা কালীন সময়ে সবাই চাকরি হারিয়ে ঘরে বসা।
তাই সময় কাটাতে সবাই কম্পিউটার কিংবা মোবাইলের স্ক্রিনের উপর চেয়ে থাকি। আর এ জন্য চোখের উপর বেশি ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে।
চোখের সমস্যা :
চোখে বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। কিছু সাধারণ রোগ হ'ল গ্লুকোমা, ছানি, দুর্বল দৃষ্টিশক্তি, চোখের শুস্কতা , কনজেক্টিভাইটিস, টেরা চোখ,রেটিনা ক্ষয় চোখের দৃষ্টি নষ্ট হওয়া ইত্যাদি। চোখের কোনও রোগ আছে কিনা তা নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি দেখে বোঝা যায়।
দুর্বল দৃষ্টিশক্তি । আরো পড়ুন - শিশুর যত্ন
চোখে ঝাপসা দেখা অথবা অস্পষ্ট কিংবা যেকোন জিনিস দুটো করে দেখা।
চুলকানি হওয়া, চোখ দিয়ে পানি পড়া।
আলোর সংবেদনশীলতা,চোখের লালচে ভাব এবং ফোলাভাব।
চোখে দৃষ্টিতে দাগ দেখা।
দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পাওয়া।
চোখে ব্যথা হওয়া।
ঘন ঘন মাথাব্যাথা হওয়া ইত্যাদি।
চোখের সমস্যার কারণ :
চোখের সমস্যার অনেক কারণ হতে পারে।
নিচে আলোচনা করা হল :
ভিটামিন এ এর ঘাটতি।
চোখে আঘাত পাওয়া।
ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি বেশিদিন ধরে শরীরে থাকলে চোখের রোগ হতে পারে।
চোখে বিভিন্ন অ্যালার্জি হতে পারে।
ব্যাকটিরিয়া, ছত্রাক, ভাইরাস চোখের সমস্যা সৃষ্টি করে।
যদি দীর্ঘদিন ধরে কোনও রোগের ওষুধ খাওয়া হয় তবে তা চোখের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।
বয়স্ক লোকেরা চোখের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগে থাকেন।
অতএব চোখের যত্ন নেয়ার গুরুত্ব অনসীকার্য।
চোখের যত্ন নেয়ার উপায় কি তা একবার দেখে নেওয়া যাক :
চোখের নিচে কালো দাগ কেন হয় তা জানা না থাকলেও সমস্যা নেই। আসুন আমরা চোখের কালো দাগ দূর করার উপায় নিয়ে আলোচনা করি।
চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার উপায় হিসেবে শসা অত্যন্ত কার্যকর। শসার সাথে টক দই মিশিয়ে প্যাক তৈরী করে ফ্রিজে রেখে দিতে হবে। তারপর মুখে লাগাতে হবে।
চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার ক্রিম বাজারে পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে ভালো ব্র্যান্ডের ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। আস্তে আস্তে চোখের নিচে কালি দূর হবে।
এছাড়া চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার ঘরোয়া পদ্ধতি অথবা উপায় সম্পর্কে গুগলে সার্চ দিলে আরো তথ্য পাবেন।
চোখের যত্নে খাবার এর তালিকায় ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার যেমন- কাঁচা শাকসবজি, সবুজ শাকসব্জী, ছোট মাছ ইত্যাদি এই খাবারগুলি চোখের জন্য খুব ভাল। ছোটদের রাতকানা রোগের জন্য কচু শাক অত্যন্ত উপকারী।
কম আলো বা তীব্র আলো চোখের জন্য ভাল নয়। দিনের বেলা সরাসরি সূর্যের দিকে তাকালে চোখের ক্ষতি হতে পারে। রাতে টিউবলাইট চোখের জন্য আরামদায়ক তবে লাল আলোর ভাল্বগুলো নয়।
টিভি, কম্পিউটার বা মোবাইল ফোনের স্ক্রিনে দীর্ঘক্ষণ চেয়ে থাকা উচিত না । কিছুক্ষণ পর পর বিরতি নেওয়া ভালো। আর সম্ভব হলে দশ ফুট দূর থেকে দেখা ভাল।
বাইরে বের হওয়ার সময় চোখে অবশ্যই সানগ্লাস পড়ে নেয়া উত্তম। এতে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে আপনার চোখকে রক্ষা পাবে। চোখে কিছু পড়লে সঙ্গে সঙ্গে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। অনেকের চোখে লেন্স করেন লেন্স পরার আগেই হাত ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। তবে বেশিক্ষণ একটানা লেন্স পড়ে থাকা উচিত নয়।
কাজ শেষে, ধুলো-বালি থেকে এসে চোখে শীতল পানি দিতে হবে। মুখ এবং হাত ভালভাবে ধুয়ে নিন।
মাঝে -মাঝে চোখে হালকা ম্যাসেজ করা ভাল। এতে চোখের ব্যায়াম হয় ও চোখ ভাল থাকে।
চোখের সমস্যা দূর করার উপায় অনেক। আর যদি ঝাপসা অথবা অন্যান্য সমস্যা যেমন মাথা ব্যথা নিয়মিত হয় তবে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।
0 মন্তব্যসমূহ