Ticker

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

শিশুর যত্ন কিভাবে নিবেন

 সদ্যোজাত শিশুর যত্ন

শিশুর যত্ন


প্রত্যেকেই চায় একটি শিশু ভালোভাবে বেড়ে উঠুক। প্রত্যেক মা এবং বাবা তাদের সন্তানের মঙ্গল কামনা করেন। ছোটবেলা থেকে একটা শিশু যদি সুস্থ ভাবে বেড়ে উঠে, বড় হওয়ার পরে সে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হবে। পরবর্তী সময়ে সে ভালোভাবে জীবন যাপন করতে সক্ষম হবে। 

সুতরাং, কোনও শিশুর শারীরিক ও মানসিকভাবে বেড়ে ওঠার জন্য বাবা-মাকে অবশ্যই  সচেতন হতে হবে। তাদেরকে  নিয়মিত বাচ্চাদের সময় দিতে হবে। শিশুর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিতে হবে। সে যাতে খেলা-ধুলার ঠিকমত পরিবেশ পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। 

শিশুর যত্নে মায়ের জিজ্ঞাসা য় রয়েছে অনেক বিষয়। শিশুর যত্ন কিভাবে নিতে হয় সে বিষয়ে যথযথ জ্ঞান থাকা আবশ্যক। 

গরমে শিশুর যত্ন ভালোভাবে নিতে হবে।  শিশুকে হালকা সুতির পোশাক পরানো উচিত। লক্ষ্য রাখতে হবে  কোনওভাবেই যেন ঘেমে না যায় । এতে কফ লেগে যেতে পারে। । শীতে গরম পোশাক পরিয়ে রাখুন যাতে ঠান্ডা না লেগে যায়। 

ঋতু পরিবর্তনের সময় সতর্ক থাকা দরকার। কারণ এই সময়ে বাচ্চাদের সর্দি, কাশি, জ্বর , ডায়রিয়া ইত্যাদির ঝুঁকি বেশি থাকে। সর্দি-কাশি হলে তুলসী পাতার রসের সাথে মধু মিশিয়ে বাচ্চাকে খাওয়ানো যেতে পারে। আনারসে এক ধরণের এনজাইম থাকে যা সর্দি-কাশির জন্য ভাল। তবে খুব ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এসব খাওয়ানো উচিত নয়।

একটি শিশুর যত্ন নেওয়ার বিভিন্ন দিক জড়িত, এবং এখানে একটি শিশুর যত্ন নেওয়ার কিছু প্রয়োজনীয় টিপস রয়েছে:

নিশ্চিত করুন যে আপনার শিশু একটি সুষম খাদ্য গ্রহণ করে। এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ফল, শাকসবজি, শস্য, প্রোটিনের উৎস এবং দুগ্ধজাত খাবার রয়েছে। আপনার সন্তানের বয়স এবং বিকাশের জন্য নির্দিষ্ট খাদ্যতালিকাগত চাহিদা সম্পর্কে নির্দেশনার জন্য একজন শিশু বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করুন।

 আপনার শিশুকে সারাদিন পানি দিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে হাইড্রেটেড রাখুন । চিনিযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলুন এবং রস খাওয়া সীমিত করুন।

আপনার সন্তানের জন্য একটি নিয়মিত ঘুমের রুটিন তৈরি করুন। তাদের বয়সের উপর নির্ভর করে, শিশুদের বিভিন্ন পরিমাণে ঘুমের প্রয়োজন হয়। একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ শয়নকাল এবং ঘুমের সময়সূচীতে থাকুন।

দুর্ঘটনা এড়াতে আপনার বাড়িকে চাইল্ডপ্রুফ করুন। বিপজ্জনক আইটেম নাগালের বাইরে রাখুন, নিরাপত্তা গেট ব্যবহার করুন, ভারী আসবাবপত্র নিরাপদ করুন এবং আউটলেট কভার ইনস্টল করুন।

তেল ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকা দরকার। বড়দের তেল শিশুদের মাথায় দেয়া অনুচিত। তাদেরকে এক্সট্রা ভার্জিন গ্রেড নারকেল তেল দিতে পারেন। সরিষার তেল ব্যবহার করা ঠিক নয়। 

খেলা এবং অন্বেষণের মাধ্যমে শেখার জন্য উত্সাহিত করুন। আপনার সন্তানকে নিয়মিত পড়ুন এবং বয়স-উপযুক্ত শিক্ষামূলক খেলনা এবং কার্যকলাপ প্রদান করুন।

খেলার তারিখগুলি সাজিয়ে এবং আপনার সন্তানকে অন্যান্য শিশুদের সাথে যোগাযোগ করার অনুমতি দিয়ে সামাজিক দক্ষতা বৃদ্ধি করুন। ভাগাভাগি এবং সহযোগিতাকে উৎসাহিত করুন।

একজন শিশু বিশেষজ্ঞের সাথে নিয়মিত চেক-আপের সময়সূচী করুন এবং টিকা দিয়ে রাখুন। অসুস্থতা বা অস্বস্তির যেকোনো লক্ষণের প্রতি মনোযোগী হোন এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

শিশু যাতে মানসিক ভাবে বেড়ে উঠে সেদিকে খেয়াল রাখুন। আপনার সন্তানের সাথে মানসম্পন্ন সময় কাটান, ক্রিয়াকলাপে নিযুক্ত হন এবং তাদের চিন্তাভাবনা এবং অনুভূতি শুনুন।

জোরে ফ্যান চালানো ঠিক নয়। এসির পাওয়ার লো করে দিন । জোরালো বাতাস ছোট বাচ্চার দেহের ক্ষতি করতে পারে।

 ইতিবাচক শৃঙ্খলা কৌশলগুলি ব্যবহার করুন যা ভাল আচরণের প্রচার করে এবং গুরুত্বপূর্ণ জীবন দক্ষতা শেখায়। শারীরিক শাস্তি এড়িয়ে চলুন এবং যোগাযোগ এবং ফলাফলের উপর ফোকাস করুন।

 আপনার সন্তানকে ভাল স্বাস্থ্যবিধি অভ্যাস শেখান, যেমন খাবারের আগে এবং বাথরুম ব্যবহার করার পরে হাত ধোয়া, দাঁত ব্রাশ করা এবং নিয়মিত গোসল করা।

খাবার, খেলার সময়, শেখার এবং ঘুমানোর জন্য দৈনন্দিন রুটিন স্থাপন করুন। অনুমানযোগ্য রুটিন শিশুদের জন্য নিরাপত্তার অনুভূতি প্রদান করে।

বাচ্চাদের ভাজা-পোড়া,দোকানের সস্তা খাবার ,ফুটপাতের খোলা খাবার , চিপস, জুস ইত্যাদি খাওয়ানো যাবে না। 

প্রচণ্ড গরমে বাচ্চাদের চুল ছোট রাখুন। শীতের শেষে শিশুদের ত্বকে বিভিন্ন এলার্জি দেখা দেয়। এসব লক্ষণ দেখা গেলে অবশ্যই  দ্রুত ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।

গরমের সময় শিশুদের নিয়মিত শরীরে ঘামচি পাউডার লাগাতে হবে। শীতের সময় বডি লোশন ও ময়েশ্চারাইজার। শীতকালে হালকা-উষ্ণ জল দিয়ে বাচ্চাকে নিয়মিত গোসল করানো  উচিত। গোসল করানোর সময় হালকা গরম পানি ব্যবহার যাবে। তবে মাথা ধোয়ানোর ক্ষেত্রে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি দিতে হবে। চুলে খুশকি হলে তেল দেয়া যাবে না।

ডায়রিয়ার ক্ষেত্রে শিশুকে বারবার ওরস্যালাইন  দেওয়া উচিত। একবারে তৈরি স্যালাইন ছয় ঘণ্টার বেশি খাওয়ানো যাবে না।

আজকাল আমরা মা-বাবারা মোবাইল ফোন দিয়ে শিশুকে খেলা দিয়ে থাকি।  এটি যে কত মারাত্মক ভুল তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। মোবাইল কখনো খেলনা হতে পারেনা । এটি শিশুর স্বাস্থ্যের উপর ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলে। 

দীর্ঘক্ষণ মোবাইল ফোন দেখলে নার্ভ, চোখ, কান ইত্যাদির ক্ষতি হয়। তদুপরি, মোবাইল ফোন থেকে নিক্ষিপ্ত  বিকিরণ শিশুর মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি করে।বাচ্চাদের মোবাইল ফোন থেকে দূরে রাখতে চাইলে অভিভাবকদের সচেতন হওয়া দরকার। 

তাদের সামনে মোবাইল ফোন কম ব্যবহার করা উচিত । তাদের মন অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করুন।  বিভিন্ন ধরণের খেলনা, ছবি আঁকা, গান গাওয়া, খেলাধুলা করা, বই পড়া এসব দিয়ে তাদের  ব্যস্ত রাখতে হবে। তাছাড়া এগুলি করার ফলে শিশুদের  চিন্তাভাবনার বিকাশ ঘটে।

উপসংহারে বলতে হয় , আপনার সন্তান আগামী দিনের ভবিষ্যত। তাই তাদেরকে সুন্দরভাবে বেড়ে তোলার কাজটা আপনাকেই করতে হবে। নতুবা সমাজ হয়ে পড়বে কলুষিত। 



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ